স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনের জন্য আমরা অনেক কিছুই করি। যেমন-সুষম খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম আরও কত কিছু। কিন্তু আমাদের বাড়ীর মধ্যে যেই ছোট ঘর আছে তা সম্পর্কে কতটা সচেতন। নিত্যদিনের ব্যবহারের ঘর “স্যানিটেশন বা টয়লেট” নিজেরা কীভাবে ব্যবহার করবো, কীভাবে পরিষ্কার রাখবো- সেই সম্পর্কে আমরা কতটাই বা সচেতন। বড়দের সাথে সাথে ছোটদেরকেও কিন্তু এই শিক্ষা নিতে হবে। কারন একটি স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন বা টয়লেট আপনার পরিবারকে সুস্থ্য রাখতে বিরাট অবদান রাখে। সেই সাথে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্যানিটেশন
আমাদের দেশে অবশ্য একটি স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবহার করতে পারা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরা হয় কিছু ক্ষেত্রে। সুস্থ্ স্যানিটেশন ব্যবহার করে গড়ে ৫৫.9% মাত্র। তার মধ্যে হাত ধোঁয়া সাবান দিয়েও এই প্রয়োজনটাও পূরণ করা কষ্টসাধ্য। একটি জরিপে দেখা গিয়েছে, রাজধানী ঢাকার বাহিরে তো সুস্থ স্যানিটেশন পাওয়া মুশকিল, ঢাকাতেও ৫জনের মধ্যে ১জন সুস্থ স্যানিটেশন ব্যবহার করতে পারে। গ্রামে এবং শহরে ফিক্যাল (Faecal) মানে মল পদার্থের নিরাপদ নিষ্পত্তি বাংলাদেশ সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
কি কি রোগ দেখা দেয়?
একটি সুস্থ নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবহার না করার ফলে খুব সহজেই পরিবারের একজন হয়তো টাইফয়েড, কলেরা বা ডাইরিয়ার মত রোগে আক্রান্ত হতে পারে, বিশেষ করে শিশুরা। টয়লেটে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া থাকে, তাই টয়লেট থেকে বের হয়ে হাত ঠিকমত ধোয়ার অভ্যাসটাও তৈরি করে নিতে হবে সবার। এছাড়া একটি সুস্থ স্যানিটেশন না থাকার কারণে একজন নারীও শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে।
যেখানে সেখানে মল ত্যাগ বা পায়খানা করলে তা পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে। মাটির সাথে মিশে গিয়ে মাটিকে যেমন দূষিত করছে ঠিক তেমনি পানির সাথে মিশে তা পানিকেও দূষিত করছে। ঐ পানি হয়তো পান করা বা ব্যবহার হচ্ছে যার থেকে খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
একজন নারীর জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন কতটা জরুরি?
ইউরিন ইনফেকশন (UTI) বা প্রসাবের জ্বালা পোড়াতে ৫০%-৬০% ভুগে থাকেন। UTI হওয়ার আরেকটি কারন কিন্তু অনিরাপদ স্যানিটেশন। যখন দূষিত পানি যোনি পথে ব্যবহার করা হয়, তখনই ইউরিন ইনফেকশন হয় সাথে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া অপরিস্কার টয়লেট অনেক নারীরাই ব্যবহার করতে চায় না, এর জন্য হয়তো সারা দিনেও টয়লেট ব্যবহার করে না, দীর্ঘ সময়ের জন্য মল ত্যাগ না করলেও কিন্তু ইউরিন ইনফেকশন হয়ে যায়।
পরিবেশ থেকে শুরু করে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করতে আমাদের বেসিক রাইটগুলোর উন্নতির প্রয়োজন। তারমধ্যে স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন অন্যতম। “Sanitation for all” ইউ এন-এর লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ এর মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন তৈরি করা। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক আরও তথ্য জানতে Lilacforyou.com এ ভিজিট করতে পারেন।
Source: UNICEF Bangladesh