৫টি ক্যান্সার নারীদের শরীরে বাসা বাঁধে

আমাদের নারীদের ৫টি ক্যান্সার হয়ে থাকে। সার্ভিকাল, ডিম্বাশয়, জরায়ু, যোনি এবং ভালভার। সমস্ত গাইনোকোলজিক ক্যান্সারের মধ্যে শুধুমাত্র সার্ভিকাল ক্যান্সারের স্ক্রীনিং টেস্ট আছে যা এই ক্যান্সারকে প্রাথমিকভাবে খুঁজে পেতে পারে, যখন চিকিত্সা সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। তাহলে চলুন ৫টি ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জেনে নিন-

(১) সার্ভিকাল ক্যান্সার কি?

সার্ভিকাল ক্যান্সার বা জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হল এক ধরনের ক্যান্সার যা জরায়ুর কোষে ঘটে — জরায়ুর নীচের অংশ যা যোনির সাথে সংযোগ করে। হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) এর বিভিন্ন স্ট্রেন, একটি যৌন সংক্রমণ, বেশিরভাগ জরায়ুর ক্যান্সার সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে।

সার্ভিকাল ক্যান্সারের লক্ষণ-

আর্লি স্টেজে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এই রোগের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ গুলো হচ্ছে –

·         যোনিপথে রক্তপাত, সহবাসের সময় রক্তপাত বা কন্টাক্ট -এ অর্থাৎ কোন কিছুর স্পর্শে রক্তপাত

·         যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত নিঃসরণ

·         জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার লক্ষণ তলপেটে ব্যথা

·         কাশি, কাশিতে রক্ত আসা

·         ডায়রিয়া, পায়খানার সাথে রক্ত আসা, প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

·         রক্ত শূন্যতায় ভোগা

·         ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুধা মন্দা, শরীর অবসন্ন লাগা

·         পিঠে ব্যথা, পায়ে ব্যথা ও পা ফুলে যাওয়া

·         অতিরিক্ত সাদাস্রাব,

·         অসময়ে বা মাসিক বন্ধ হওয়ার পরও রক্ত যাওয়া।

(২) ওভারিয়ান ক্যান্সার কি? 

ওভারিয়ান ক্যান্সার হল এক ধরনের ক্যান্সার যা ডিম্বাশয়ে শুরু হয়। ডিম্বাশয় – প্রতিটি একটি বাদামের আকারের – ডিম (ওভা) পাশাপাশি ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোন তৈরি করে। ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের চিকিৎসায় সাধারণত অস্ত্রোপচার এবং কেমোথেরাপি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

ওভারিয়ান ক্যান্সারের লক্ষণ-

·         পেট ফুলে যাওয়া

·         খাওয়ার সময় দ্রুত পেট ভরে গিয়েছে এমন বোধ করলে,

·         ওজন কমে গেলে,

·         পেলভিক এলাকায় অস্বস্তি করলে

·         একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়লে

·         পিঠে ব্যাথা

·         কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে

·         ঘন ঘন প্রস্রাব করার প্রয়োজন

(৩) জরায়ুর মুখে ক্যান্সার কি?

জরায়ু ক্যান্সারের মধ্যে দুটি ধরণের ক্যান্সার রয়েছে: এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার এবং জরায়ু সারকোমা। জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রায়ই জরায়ু অপসারণের জন্য হিস্টেরেক্টমি করা হয়।

জরায়ুর মুখে ক্যান্সারের লক্ষণ-

·         জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে পিরিয়ডের বা মেনোপজের পরে রক্তপাত। এই ধরনের 15 শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ু ক্যান্সার হয়।

·         যোনিপথে রক্তপাত বা মেনোপজের পর দাগ দেখা, এমনকি সামান্য পরিমাণে। যোনি থেকে পানি বা রক্ত ​​স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত বা বাদামী রঙের স্রাব।

·         তলপেটে ব্যথা বা আপনার পেলভিসে ক্র্যাম্পিং।

·         যদি আপনি পোস্টমেনোপজাল হন তবে পাতলা সাদা বা পরিষ্কার যোনি স্রাব।

·         আপনার বয়স ৪০ এর বেশি হলে অত্যন্ত দীর্ঘায়িত, ভারী বা ঘন ঘন যোনি থেকে রক্তপাত।

·         অনিয়মিত পিরিয়ড

·         মাসিকের সময় ভারী হওয়া

·         প্রস্রাবে অসুবিধা বা ব্যথা

·         অব্যক্ত ওজন হ্রাস

·         সাধারণ দুর্বলতা

·         পিছনে এবং পায়ে ব্যথা (যখন ক্যান্সার কাছাকাছি ছড়িয়ে পড়ে)

·         তলপেট বা শ্রোণীতে ব্যথা

·         সহবাসের সময় ব্যথা

(৪)ভ্যাজাইনাল বা যোনি ক্যান্সার কি?

ভ্যাজাইনাল নারীর বাহ্যিক যৌনাঙ্গ। ভ্যাজাইনাল ক্যান্সার সাধারণত ভলভাতে ঘা বা গলদ তৈরি করে যার ফলে চুলকানি হয়।

যোনি/ ভালভার ক্যান্সার যে কোন বয়সে বিকাশ লাভ করতে পারে কিন্তু বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় (৬০ এর উপরে)

ভ্যাজাইনাল ক্যান্সারে সাধারণত ভলভাতে ঘা বা গলদ তৈরি করে যার ফলে চুলকানি হয়।

ভ্যাজাইনাল বা যোনি ক্যান্সারের লক্ষণ-

·         মেনোপজের সময় বা পরে যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত।

·         প্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণা।

·         যৌন মিলন করার সময় যন্ত্রণা।

·         পেলভিক এরিয়াতে যন্ত্রণা।

·         যোনিতে মাংসপিন্ড।

·         যোনি স্রাব বা রক্তের ছোপযুক্ত যোনি স্রাব।

·         যোনিতে চুলকানি।

·         পিঠে ব্যথা।

·         পায়ে ব্যথা।

·         পা ফুলে যাওয়া।

·         কোষ্ঠকাঠিন্য।

(৫) ভালভার ক্যান্সার কি?

ভালভার ক্যান্সার বিশেষত মেনোপজের মধ্যে দেখা দেয়। লাবিয়া বা যোনির উপরের পুরু ঠোঁটের মতো আবরণ সাধারণত সবচেয়ে বেশি ভালভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

ভালভার ক্যান্সারের লক্ষণ-

·         যোনীতে চুলকানি হওয়া।

·         ঘা সৃষ্টি হওয়া।

·         রক্তপাত।

·         যোনি স্রাব এবং ব্যথা।

·         ফোলাভাব, মাংসপিন্ড বা ঘা হওয়া।

·         লিউকোপ্লাকিয়া।

যখনই এই লক্ষণগুলো দেখতে পারবেন, দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাবেন। কোন কিছু নিয়ে কনফিউশন থাকলে Lilacforyou.com এ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ঘরে বসেই কথা বলতে পারেন। আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি হেল্পফুল ছিল।

Shopping Cart

Home