দৃষ্টিহীন জগৎ আর পিরিয়ড 

প্রতি বছরের ৪ই জানুয়ারি দিনটিতে আন্তর্জাতিক ব্রেইল ডে হিসেবে উদযাপন করা হয়। মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৮২৯ সাথে লুইস এই সিস্টেম ইনভেন্ট করেন। ২০১৮ সালে প্রথম ইউএন (UN) আন্তর্জাতিক ব্রেইল ডে ঘোষনা করে থাকে। বাংলাদেশে আনুমানিক ৬৫০০০০ প্রাপ্তবয়স্ক অন্ধ মানুষ রয়েছে, যার মধ্যে নারীর সংখ্যা ৫৫%। আমাদের দেশেও ব্রেইল সিস্টেমের চর্চা রয়েছে কিন্তু তার সংখ্যা খুবই গণ্য। 

ব্রেইল সিস্টেম কি? 

ব্রেইল সিস্টেম মূলত যারা চোখে দেখতে পারে না, তাদের পড়া এবং লেখার ক্ষেত্রে ব্রেইল সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই সিস্টেমে প্রতিটি অক্ষর এবং সংখ্যাকে ছোট ছোট ডট বা ছিদ্র দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

একজন মানুষের প্রতিটি অঙ্গই জরুরি। আর চোখে দেখতে না পারা নারীদের জন্য লাইফে তাল মিলিয়ে চালিয়ে নেয়া সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সবচেয়ে বড় প্রবলেম ফেইস করে যখন পিরিয়ড শুরু হয়। হঠাৎ পিরিয়ড শুরু হয়ে গেলে, প্যাড ঠিকমতপরতে পারছে নাকি, লিক করলো নাকি- এইসব সমস্যা তো আছেই, সাথে শারীরিক সমস্যাগুলোকেও কিন্তু একা অন্ধকারে ফেইস করতে হয়। আজকের আর্টিকেল সেই সব নারীদের জন্য যারা চোখে দেখতে পারে না, কিন্তু পিরিয়ড ঠিকই হ্যান্ডেল করে চলেছেন। আবার অনেকেই হয়তো হ্যান্ডেল করতে পারছে না; কীভাবে নিজেকে সাহায্য করবেন? তাদের দরকার আপন মানুষের সাহায্য, সেই সাথে নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস। 

১। পিরিয়ড ট্র্যাক করা:  ২৮দিন পর পর পিরিয়ডের সাইকেল থাকে। সেই ক্ষেত্রে ব্রেইল পদ্ধতিতে হিসাব রাখা যায়। আজকাল অনেক অ্যাপ রয়েছে, পিরিয়ড ট্রেক করতে পারেন।

২। অন্যান্য সেন্স ব্যবহার করা: পিরিয়ড হওয়ার আগে বেশ কিছু সিমট্মপ্স দেখা দেয়। যেমন- মুড সুইং, মাথা ব্যাথা, ব্রেস্ট নরম হয়ে যাওয়া, পেট ব্যাথা, একনি আরও বেশ কিছু রয়েছে। এই উপসর্গগুলো দিয়েই বুঝতে পারবেন পিরিয়ড হবে। 

৩। লিক হতেই পারেঃ পিরিয়ড হলে লিক হতেই পারে। লজ্জা পাবার কিছুই নেয়। তাছাড়া লিক করলে এক ধরনের গন্ধ বের হবে, এতে বুঝতে পারবেন। এছাড়া আসে পাশের নিজের মানুষের সাহায্য নিতে পারেন।  

পিরিয়ড নিয়ে কথা বলুন: সাধারণত মেয়েদের ১২ বছর থেকে পিরিয়ড হয়। তাই এর আগে থেকেই মেয়ের সাথে কথা বলুন। হতে পারে- মা, বোন, শিক্ষিকা; যে মেয়েকে বুঝিয়ে বলবেন পিরিয়ড কি, কীভাবে প্যাড পড়তে হয়, কতক্ষণ পর পরিবর্তন করতে হয়। এছাড়া যারা দেখতে পান না তাদেরও অন্য একজনের সাহায্য নিতে হবে, লজ্জা পেলে হবে না। 

এই আর্টিকেল যারা দেখতে পায় না, তারা হয়তো পড়তে পারবেন না। আমরা যারা চোখে দেখতে পারি, পড়তে পারি, তারা একটু পড়ে শুনাতে পারি, সাহস দিতে পারি। চোখে দেখতে না পারার পর নিজেকে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারা অনেক সাহসের কাজ। নিজেকে আরও আত্নবিশ্বাসী গড়ে তুলুন।

Shopping Cart

Home